অনেক বাবা-মা অভিযোগ করেন, তাদের শিশু রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে। কোনো কোনো বাবা-মা বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘ডাক্তার সাহেব, রাতে যেন বিছানায় প্রস্রাব না করে, তার কোনো ওষুধ দিন।’ শিশুদের সাধারণত ২ থেকে ৪ বছরের মধ্যে ওয়াশরুমে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে। তবে কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে একটু দেরি হতে পারে। ৫ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত শিশুরা রাতে বিছানায় প্রস্রাব করলে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এ বয়স পর্যন্ত শিশুদের প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা পুরোপুরি গড়ে ওঠে না। তবে বিছানা ভেজানোর জন্য কেবল শিশুকে দোষারোপ করলে হবে না। শিশুর বাবা-মায়ের শিশু বয়সে এ ধরনের সমস্যা থাকলে শিশু বংশানুক্রমে এ সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
যেসব কারণে শিশু বিছানায় প্রস্রাব করে : প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা না থাকা। ৫-৬ বছর বয়স পর্যন্ত মূত্রাশয় ছোট থাকে। তাই প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা কম থাকে বলে শিশুরা রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে। অউঐ নামের হরমোন মূত্র তৈরির প্রক্রিয়া মন্থর করে। এই হরমোনের পরিমাণ কম হলে দ্রুত মূত্র তৈরি হয়ে প্রস্রাবের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। টঞও বা মূত্রনালি, মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণে বারবার প্রস্রাবের সমস্যা হতে পারে। এ সমস্যা দেখা দিলেও শিশুরা রাতে বিছানা ভেজাতে পারে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে মূত্রনালি, মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
সিøপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা থাকলেও শিশুরা রাতে বিছানা ভেজাতে পারে। প্রতিনিয়ত শিশুদের ওপর চাপ বাড়ছে। পড়াশোনায় প্রতিযোগিতা, স্কুল, বাসা, কোচিং সেন্টার সব মিলিয়ে শিশুদের ত্রাহি অবস্থা। মানসিক চাপ থাকলেও শিশুরা বিছানায় প্রস্রাব করতে পারে।
যখন শিশুকে ডাক্তারের কাছে নেবেন : ৫ থেকে ৬ বছর কিন্তু এই বয়স পেরোলে শিশুরা রাতে বিছানায় প্রস্রাব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শিশু বহুদিন পরে যদি বিছানায় প্রস্রাব করে। যদি প্রস্রাবের রঙ গোলাপি হয়। শিশুর বারবার পিপাসা পেলে। শিশুদের ডায়াবেটিস হতে পারে। তাই বারবার প্রস্রাব হওয়ার ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে খেয়াল করবেন, ডায়াবেটিসের সুনির্দিষ্ট লক্ষণগুলো রয়েছে কিনা।
কিছু অভ্যাস অনুসরণ করুন : মনে রাখতে হবে, শিশুদের বিছানা ভেজানোর সমস্যা তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠিক হয়ে যায়। বিছানা ভেজানোর অভ্যাসের কারণে শিশু নিজেই লজ্জিত থাকে। তাই তাকে বকাবকি করা যাবে না। শিশুকে রাতে পানি কম পান করতে দিন। তা হলে প্রস্রাবের বেগ পাবে না। তাই বলে শিশুর পানির চাহিদা অপূরণ রাখলে চলবে না।
Leave a Reply